০৯. প্রত্যাবর্তন

Any Subtitleজুন 29, 2023

[ad_1]

প্রত্যাবর্তন

সেবার দূষিত ছিল বড়ো বায়ু মক্কাপুরীর,
নিশ্বাসে ছিল বিষের আমেজ হাওয়ায় সুরীর।
কহিলেন দাদা মুত্তালিব, ‘গো হালিমা শুনো,
মরু-প্রান্তরে লয়ে যাও মোর চাঁদেরে পুন!
আবার যেদিন ডাকিব, আনিবে ফিরায়ে এরে,
মাঝে মাঝে এনে দেখাইয়া যেয়ো মোর চাঁদেরে!’
আমিনার চোখে ফুরাল শুক্ল চাঁদের তিথি,
আবার আসিল ভবনে অতীত-আঁধার ভীতি।
স্বপনে চলিয়া গেল যেন চাঁদ স্বপনে এসে,
দ্বিতীয়ার চাঁদ লুকাল আকাশে ক্ষণেক ভেসে।
অঙ্গ ভরিয়া অশ্রু-চুমায় চলিল ফিরে
সোনার শিশু গো – নীড় ত্যজি পুন অজানা তীরে।
হালিমার বুকে খুশি ধরে নাকো, নীলাঞ্চলে
হারানো মানিক পুন পেল তার ভাগ্যবলে!
চলে অলক্ষ্যে সাথে বেহেশ্‌ত-ফেরেশতারা!
মক্কার মণি পুন মরুপথে হইল হারা।
হালিমার দুই কন্যা ‘আনিসা’ ‘হাফিজা’ ছুটি
চুমিল খুশিতে মোহাম্ম্দের নয়ন দুটি!
‘আবদুল্লাহ্’ হালিমা-দুলাল মানের ভরে
রহিল দাঁড়ায়ে অদূরে, নয়নে সলিল ঝরে।
সে যখন ছিল ঘুমায়ে, তাহার জননী কখন
নিয়ে গেল কোথা মোহাম্মদেরে ; ভাঙিতে স্বপন
খুঁজিল কত না সাথিরে তাহার কানন গিরি!
রোদন করুণ প্রতিধ্বনিতে এসেছে ফিরি!
শয়নে স্বপনে ওই মুখ তার স্মৃতির মাঝে
উঠিয়াছে ভাসি, হেরেছে তাহারে সকল কাজে।
নড়িয়া উঠেছে খেজুরের পাতা বাতাসে যবে
সে ভেবেছে তারে ডাকিতেছে সাথী নূপুর-রবে।
শিস দিত যবে বুলবুলি বসি আনার-শাখে,
মনে হত তার, বন্ধু বংশী বাজায়ে ডাকে।
দুম্বা মেষের শিশুরা করুণ নয়ন তুলি
চাহিয়া থাকিত, খুঁজিত কাহারে সকল ভুলি।
মেষ-চারণের মাঠে তরুতলে বসিয়া একা
পাঠায়েছে তার হারানো সখারে সলিল-লেখা।
ফিরিয়া আসিল লুকোচুরি খেলে যদি সে চপল,
ওর সাথে আড়ি – বল মায়ে ওরে নিয়ে যেতে বল।
হালিমার স্বামী হারিস শিশুরে লইল কাড়ি,
আনন্দ তার পুনরায় যেন ফিরিল বাড়ি।
মোহাম্মদ সে আবদুল্লার কন্ঠ ধরি
বলে, ‘আমি কত কেঁদেছি দোস্ত তোমারে স্মরি।’
ছুটিল আবার দুটিতে পাহাড়ি চারণ-মাঠে,
বংশী বাজায়ে দুম্বা চরায়ে সময় কাটে!
রাখালের রাজা আসিল ফিরিয়া রাখাল-দলে,
আবার লহর-লীলায় পাহাড়ি নহর চলে।

Leave a comment

Name *
Add a display name
Email *
Your email address will not be published

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

bn_BDবাংলা