মোহররম

Any SubtitleJuli 2, 2023

[ad_1]

মোহররম

ওরে বাংলার মুসলিম, তোরা কাঁদ!
এনেছে এজিদি বিদ্বেষ পুন মোহররমের চাঁদ।
এক ধর্ম ও এক জাতি তবু ক্ষুধিত সর্বনেশে
তখ্‍তের লোভে এসেছে এজিদ কমবখ্‌তের বেশে!
এসেছে ‘সীমার’, এসেছে ‘কুফা’র বিশ্বাসঘাতকতা,
ত্যাগের ধর্মে এসেছে লোভের প্রবল নির্মমতা!
মুসলিমে মুসলিমে আনিয়াছে বিদ্বেষের বিষাদ,
কাঁদে আশমান জমিন, কাঁদিছে মোহররমের চাঁদ।
একদিকে মাতা ফতেমার বীর দুলাল হোসেনি সেনা,
আর দিকে যত তখ্‌ত-বিলাসী লোভী এজিদের কেনা।
মাঝে বহিতেছে শান্তিপ্রবাহ পুণ্য ফোরাত নদী,
শান্তিবারির তৃষাতুর মোরা, ওরা থাকে তাহা রোধি!
একদিকে ইসলামি ইমামের সিপাহি শান্তিব্রতী,
আর একদিকে স্বার্থান্বেষী হিংসুক ক্রোধমতি!
এই দুনিয়ার মৃত্তিকা ছিল তখ্‌ত সে খলিফার,
ভেঙে দিয়েছিল স্বর্ণ-সিংহাসনের যে অধিকার,
মদগর্বী ও ভোগী বর্বর এজিদি ধর্মী যত,
যুগে যুগে সেই সাম্য ধর্মে করিতে চেয়েছে হত।
এই ধূর্ত ও ভোগীরাই তলোয়ারে বেঁধে কোরআন,
‘আলীর’ সেনারে করেছে সদাই বিব্রত পেরেশান!
এই এজিদের সেনাদল শয়তানের প্ররোচনায়
হাসান হোসেনে গালি দিতে যেত মদিনা ও মক্কায়।
এরাই আত্মপ্রতিষ্ঠা-লোভে মসজিদে মসজিদে
বক্তৃতা দিয়ে জাগাত ঈর্ষা হায় স্বজাতির হৃদে।
ঐক্য যে ইসলামের লক্ষ্য, এরা তাহা দেয় ভেঙে।
ফোরাত নদীর কূল যুগে যুগে রক্তে উঠেছে রেঙে
এই ভোগীদের জুলুমে! ইহারা এজিদি মুসলমান,
এরা ইসলামি সাম্যবাদেরে করিয়াছে খান খান!
এক বিন্দুও প্রেম-অমৃত নাই ইহাদের বুকে,
শিশু আসগরে তির হেনে হাসে পিশাচের মতো সুখে!
আপনার সুখ ভোগ ও বিলাস ছাড়া জানে নাকো কিছু,
একজন বড়ো হতে চায়, করে লক্ষ জনেরে নিচু।

আজন্ম রহি শ্বেতমর্মর-প্রাসাদে মদবিলাসী,
তখ্‌ত টলিলে বলে, ‘দরিদ্রে মোরা বড়ো ভালবাসি!’
দরিদ্রেরে ভালবেসে যার ভুঁড়ি ফেঁপে হল ধামা ঝুড়ি,
শীতের দিনেও চর্বি গলিয়া পড়ে চাপকান ফুঁড়ি,
যাদের চরণ পরশ করেনি কখনও ধরার ধূলি,
যাহারা মানুষে করেছে ভৃত্য মুটে মজুর ও কুলি,
অকল্যাণের দূত তারা আজ ভূত সেজে পথে পথে
মৃত্যুর ভয়ে ফিরিতেছে নেমে সোনার প্রাসাদ হতে।
সার্বজনীন ভ্রাতৃত্ব, ইসলামের সাম্যবাদ
যুগে যুগে এই অসুর-সেনারা করিয়াছে বরবাদ।
ফোরাত নদীর স্রোত [ধারা]-সম ধনসম্পদ লয়ে
দেয় নাকো পিয়াসের এক ফোঁটা পানি। নির্মম হয়ে
মারে কাটে এরা বে-রহম, এরা টলে নাকো কোনোদিন,
এজিদি তখ্‌ত টুটেছে বলিয়া ছুটিছে শ্রান্তিহীন।
আল্লা রসুল মুখে বলে, তাঁর ক্ষমা পায়নিকো এরা,
দেখেছে শুষ্ক দামেস্ক শুধু, দেখেনি কাবা ও হেরা।
শোনেনি ইহারা আল-আরবির সাম্য প্রেমের বাণী।

আল্লা! এরাও মুসলিম, এরা রসুলের উম্মত,
কেন পায়নিকো প্রেম আর ক্ষমা শান্তি ও রহমত?
ভুল পথে নিতে চায় অন্যেরে, ভুল পথে চলে, তবু
এরা মোর ভাই, এদেরে জ্ঞান ও প্রেম ক্ষমা দাও প্রভু!
লোভ ও অহংকার ইহাদেরে করিয়াছে অজ্ঞান,
সাম্য মৈত্রী মানে না, তবুও এরা যে মুসলমান।
এদের ভুলের, মিথ্যা মোহের করি শুধু প্রতিবাদ,
ইহাদেরই প্রেমে কাঁদি আমি, কেন এরা হল জল্লাদ?
আমাদের মাঝে যত দ্বন্দ্ব ও মন্দ হউক ভালো,
আল্লা! আবার জ্বালাও প্রেমে শান্ত মধুর আলো!
ভালোবাসাহীন এই পৃথিবীরে আর ভালো লাগে নাকো,
আমার পরম প্রেমময় প্রভু, প্রেম দিয়ে বেঁধে রাখো!
খলিফা হইয়া মুসলিম দুনিয়ার বাদশাহি করে,
ভৃত্যে চড়ায়ে উটের পৃষ্ঠে নিজে চলে রশি ধরে!

খোদার সৃষ্ট মানুষেরা ভালোবাসিতে পারে না যারা,
জানি না কেমনে জন-গণ-নেতা হতে চায় হায় তারা!
ত্যাগ করে নাকো ক্ষুধিতের তরে সঞ্চিত সম্পদ,
নওয়াব বাদশা জমিদার হয়ে, চায় প্রতিষ্ঠা-মদ।
ভোগের নওয়াব আমির ইহারা, ত্যাগের আমির কই?
মোহররমের বিষাদ-মলিন চাঁদ পানে চেয়ে রই!
মা ফাতেমা! কোন জন্নতে আছ? দুনিয়ার পানে চাহো,
প্রার্থনা করো, দূর হোক ভায়ে ভায়ে বিদ্বেষ দাহ!
আমাদের মাঝে যার লোভ আছে, তাহা দূর হয়ে যাক,
যাহারা ভ্রান্ত, আসুক তাদের সত্যপথের ডাক।
ফোরাতের পানি ধরার মরুতে শান্তিধারার মতো
না, না, তোমারই মাতৃস্নেহ-রূপে বহে অবিরত।
সেই পবিত্র স্নেহবন্যার দুই কূলে ভায়ে ভায়ে –
হানাহানি করে! তুমি কাঁদিতেছ কোন জন্নত-ছায়ে?
ফোরাতের পানি রক্তিম হল ; মা গো, বিদ্বেষ-বিষে,
কারা তির হানে কাবার শান্তি মিনারের কার্নিশে?
তুমি দাও মাগো ফিরদৌস হতে দুটি ফোঁটা আঁখিবারি,
তব স্নেহবিগলিত অশ্রু, মা, সর্বতৃষ্ণাহারী!
তুমি নবিজির নন্দিনী, নন্দন-আনন্দ দাও,
আল্লার কাছে ভায়ে ভায়ে পুন মিলন-ভিক্ষা চাও!
‘সীমার’ ‘এজিদ’ সকলের তরে কেয়ামতে ক্ষমা চাবে,
আজ দুনিয়ায় ভায়ে ভায়ে কী মা রবে দুশমনি ভাবে?
দূর হোক এই ভাবের অভাব, ভায়ে ভায়ে এই আড়ি,
সকলের ঘরে যাক আরবের খেজুর রসের হাঁড়ি!
অখণ্ড এক চাঁদ আজ বুঝি দু-খণ্ড হয়ে যায়,
শরিকি আসিল হায় যারা মানে লা-শরিক আল্লায়।
কারবালা যেন নাহি আসে আর মোহররমের চাঁদে,
তাজিয়া মিছিলে একী কাজিয়ার খেলা, দেখে প্রাণ কাঁদে
শান্তি, শান্তি, আল্লা শান্তি দাও।
সর্বদ্বন্দ্বাতীত তুমি, নাও তব প্রেমপথে নাও।

Leave a comment

Name *
Add a display name
Email *
Your email address will not be published

Situs ini menggunakan Akismet untuk mengurangi spam. Pelajari bagaimana data komentar Anda diproses.

id_IDBahasa Indonesia