মুরলীধর বসু-কে

Any SubtitleJune 29, 2023

[ad_1]

মুরলীধর বসু-কে

হুগলি,
১৫ নভেম্বর, ১৯২৫
প্রিয় মুরলীদা!

আজ তোমার চিঠি পেয়ে জ্বরজ্বর মনটা বেশ একটু ঝরঝরে হয়ে উঠল। দুটো কথাতেই তোমার যে প্রীতি উপচে পড়েছে, তা আমার হৃদয়-দেশ পর্যন্ত গড়িয়ে এসেচে। দিন ছয়েক থেকে ১০৩- ৪- ৫ ডিগ্রি করে জ্বরে ভুগে আজ একটু অ-জ্বর হয়ে বসেছি। পঞ্চাশ গ্রেন কুইনাইন মস্তিষ্কে ঊনপঞ্চাশ বায়ুর ভিড় জমিয়েছে। আমার একটা মাথাই এখন হয়ে উঠেছে দশমুণ্ড রাবণের মতো ভারী, হাত দুটো নিসপিস করছে – সেই সঙ্গে যদি বিশটা হাতও হয়ে উঠত! তাহলে আগে দেবতাগুষ্ঠীর নিকুচি করে আমাদের ভাঙা ঘরে সত্যিকারের চাঁদের আলো আসে কিনা দেখিয়ে দিতাম। মুশকিল হয়েছে মুরলীদা, আমরা কুম্ভকর্ণ হতে পারি, বিভীষণ হতে পারি – হতে পারিনে শুধু রাবণ। দেবতা হওয়ার লোভ আমার কোনো দিনই নেই – আমি হতে চাই তাজা রক্ত-মাংসের শক্ত হাড্‌ডিওয়ালা দানব-অসুর! দেখেছ কুইনাইনের গুণ!…

যাক, এখন ভাবছি শৈলজার মাটির ঘর তুলি কী করে? মাথা তো একবারে তুর-র-র-ভোঁ!… ‘লাঙল’-এর ফাল আমার হাতে – ‘লাঙল’-এর শুধু বা কাঠেরটাই বেরোয় প্রথমবার। শুধু একটা ‘কৃষাণের গান’ দিয়েছি। নলিনীদাও নাকি চিদানন্দকে স্মরণ করেছেন। – জ্বরে চিত। অফিসটা বোধ হয় চিৎপুরে উঠিয়ে নিয়ে যেতে হবে। অফিসের দোরে একটা আস্ত লাঙল টাঙিয়ে দিতে বলেছি। ওই হবে সাইন বোর্ড। বেশ হবে, না? যাক শৈলজাকে বোলো একটা কিছু করবই।

তোমাদের এক দিন আসতে হবে কিন্তু এখানে। Sincerely-র বাংলা যা হয় – তাই করে বলেছি।… ‘দোলন-চাঁপা’৫ পেয়েছ নৃপেনের৬ কাছ থেকে? তোমাদের সবাইকে দিয়েছি তার হাতে।…

হাঁ, তোমাকে লিখতে হবে কিন্তু ‘লাঙল’-এ। প্রথমবারই দিতে হবে। সকলে মিলে কাঁধ দেওয়া যাক।…শৈলজা, প্রেমেন, অচিন্ত্যকে তাড়া দিয়ো লেখার জন্যে।… আর জায়গা নেই।…

নজরুল

Leave a comment

Name *
Add a display name
Email *
Your email address will not be published

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

en_USEnglish